সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩২ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক।। পদ্মাসেতুর বদৌলতে বরিশালে প্রথমবারের মতো স্থাপন করা হয়েছে পোশাক তৈরির কারখানা। একই সঙ্গে বোতলজাত পানি শোধনাগার গড়ে তোলা হয়েছে। নতুন নতুন কলকারখানা স্থাপনে আগ্রহী হচ্ছেন শিল্পোদ্যোক্তারা। সবমিলিয়ে পদ্মাসেতু চালুর পর পাল্টে যাচ্ছে বরিশালের অর্থনীতির চিত্র।
জানা গেছে, নগরীর বিসিক এলাকায় নেমর্যাক ডিজাইন গার্মেন্টস হচ্ছে বরিশালের প্রথম পোশাক তৈরির কারখানা। অবকাঠামো নির্মাণের পর ওই কারখানায় এখন যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ চলছে। ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন এ কারখানায় সহস্রাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হবে। কারখানাটি আগামী তিন মাসের মধ্যেই উৎপাদনে যাবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
নেমর্যাক ডিজাইন গার্মেন্টসের মালিক তৌহিদুল ইসলাম বলেন, অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। আশা করছি, বাকি কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করা হবে।
শুধু নেমর্যাক গার্মেন্টস নয়; পদ্মাসেতু চালুর পর সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় নগরীর বিসিক এলাকায় গড়ে উঠছে শীতবস্ত্রে ব্যবহৃত কমফোর্টার কারখানা। কারখানাটি উৎপাদনে গেলে বিদেশে কমফোর্টার রফতানি করা হবে।
এ বিষয়ে বিএনসি হোম টেক্সটাইল লিমিটেডের মালিক খায়রুল হাসান বলেন, পদ্মাসেতু চালু হওয়ার পর চাইনিজ সহযোগীরা আমাদের সাথে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া এখানে বোতলজাত পানি পরিশোধনের কারখানাও হচ্ছে। আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের বাজারে ছাড়ার আগেই এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা পর্যায়ে রয়েছে মোহিনী মিনারেল ওয়াটার।
মোহিনী মিনারেল ওয়াটারের মালিক জামাল হোসেন বলেন, আমরা আগে যে জিনিস বরিশাল থেকে ঢাকায় আট ঘণ্টায়ও ডেলিভারি দিতে পারতাম না, এখন সেটি পাঠাতে তিন ঘণ্টা সময় লাগছে। এতে আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হয়েছে। তাই আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।
বিসিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইব্রাহিম খান বলেন, পদ্মাসেতু চালুর পর বিভিন্ন উদ্যোক্তা বরিশাল বিসিকের প্লট নেয়ার জন্য যোগাযোগ করছেন। সম্প্র্রতি বিসিকে ৭৪ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পে ৩৭ একর নিচু জমি ভরাট করে ১১০টি প্লট করা হয়েছে। এরই মধ্যে প্রায় ৩০টি প্লট ব্যবসায়ীরা বরাদ্দ নিয়েছেন।
বরিশাল বিসিকের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. জলিস মাহমুদ বলেন, বিসিকের দখলে যেসব জমি ছিলো সেগুলো অনুন্নত ছিল। একটি প্রকল্পের মাধ্যমে সেটি উন্নত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করছি, আগামী বছরের শেষের দিকে এ প্রকল্পটি শেষ হয়ে যাবে। তখন আমরা ৯০টির মতো শিল্প প্রতিষ্ঠানকে প্লট বরাদ্দ দিতে পারবো। উল্লেখ্য, ১৯৬০ সালে নগরীর কাউনিয়ায় ১৩০ একর জমি নিয়ে বিসিক শিল্প এলাকা গড়ে ওঠে। বর্তমানে ১৭৩টি শিল্প ইউনিটের মধ্যে ১১৭টি চলমান রয়েছে।
পদ্মাসেতু উদ্বোধনের মাত্র তিন মাসের মধ্যেই পাল্টে যেতে শুরু করেছে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতির চিত্র। একদিকে যেমন শিল্পে বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন উদ্যোক্তারা, তেমনি দেশের সর্বদক্ষিণের পর্যটন এলাকা সাগরকন্যা কুয়াকাটায় আগের চেয়ে কয়েকগুন বেশি পর্যটক বৃদ্ধি পেয়েছে।
Leave a Reply